Sunday, October 25, 2015

বঞ্চিত শিশুদের পাশে তরুণ জুয়েল

| No comment
মোস্তফা, জেলা প্রতিনিধি, বাংলামেইল২৪ডটকম

টাঙ্গাইল: সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে একক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন ফ্রেন্ডশিপ স্কুল। এই তরুণের নাম জুয়েল আহমেদ। তরুণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র। স্কুল থেকে ঝরে পড়া ও ঝরে পড়ার মতো অন্তত ৭০ জন কোমলমতি শিশুকে সম্পূর্ণ বিনা খরচে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষা উপকরণও দিচ্ছেন জুয়েল। শুধু তাই নয়, জুয়েল প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলোতে গিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত শিশুঅধিকার, বাল্যবিবাহ ও মাদকবিরোধী নাটক, পথনাটক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। ফ্রেন্ডশিপ স্কুল প্রতিষ্ঠা ছাড়াও বন্ধু ও সহপাঠীদের নিয়ে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার অসচ্ছল শিশুদের খুঁজে বের করে তাদের শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলছেন তিনি। বাল্যবিবাহ, মাদকাসক্তি ও শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধে তার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে সচেতনামূলক নানা অনুষ্ঠান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিরক্ষরতা মুক্ত সমাজ গড়তে টাঙ্গাইলের তরুণ জুয়েল আহমেদ নিজবাড়ি শহরের আদিটাঙ্গাইলে গড়ে তুলেছেন ফ্রেন্ডশিপস্কুল। শিক্ষাবঞ্চিত শিশুরা সম্পূর্ণ বিনাখরচে লেখাপড়া করছে সেখানে। এস্কুলের শিশুদের বেশিরভাগই দিনমজুর বা শ্রমিকের সন্তান। ফ্রেন্ডশিপ স্কুলের ছাত্রী মনিরার বাংলামেইলকে জানায়, তার বাবা একজন দিনমজুর। তার বাবার উপার্জনে তাদের সংসার ঠিকমতো চলে না। এ কারণে তারা লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারে না। ফ্রেন্ডশিপ স্কুলে না এলে তার পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়তো। এ স্কুলে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়ে সে খুবই খুশি। স্কুল থেকেই তারা লেখাপড়ার জন্য বইখাতা, কলম বিনামূল্যে পাচ্ছে। জুয়েলের ফ্রেন্ডশিপ স্কুলে সন্তানদের পড়ালেখার সুযোগ পাওয়ায় খুশি অভিভাবকরাও। তারা জানালেন, অভাব অনটনের কারণে তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় ফ্রেন্ডশিপ স্কুল ছেলেমেয়েদের শিক্ষালাভের সুযোগ করে দেয়ায় বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হয়েছে।

ফ্রেন্ডশিপ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা জুয়েল আহমেদ বাংলামেইলকে জানান, স্কুলের পাশাপাশি হিউম্যানিটি ফর পিপলস নামে তিনি একটি সংগঠন গঠন করেছেন শুধু সুবিধাবঞ্চিত, অবহেলিত শিশুদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য। জুয়েল আহমেদ ইংরেজি মাধ্যমের কয়েকজন ছাত্র পড়িয়ে যে সামান্য সম্মানী পান, তাই দিয়েই প্রাথমিকভাবে এই স্কুলটি পরিচালনা করছেন এবং তার গড়া সংগঠনের তহবিলও নিজের টিউশনির টাকায় গঠন করা। এই তহবিল থেকে স্কুল পরিচালনার ও শিক্ষা উপকরণ দেয়ার পাশাপাশি আবার শিশুদের কল্যাণেও ব্যয় করা হচ্ছে। এই তরুণের এ উদ্যোগটিকে স্থানীয়ভাবে একটি রোলমডেল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে যেন কোনো শিশু ঝরে না পড়ে, প্রতিটি শিশুই যেন বিনা খরচে শিক্ষার সুযোগ পায়, এটা নিশ্চিত করাই জুয়েলের একান্ত স্বপ্ন। তার এ স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে সরকারি-বেসরকারি কিংবা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

http://www.banglamail24.com/news/2015/03/07/id/167141
Tags :

No comments:

Post a Comment

Articles